উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কঠোর অবস্থানে আছে বলে জানিয়েছেন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর ঝুঁকিপূর্ণ ২৪ উপজেলায় অতিরিক্ত বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার বিকেলে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারের আয়োজিত প্রেস বিফ্রিংয়ে তিনি এসব তথ্য জানান।
ইসি সচিব বলেন, আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। যেসব উপজেলায় সমস্যা আছে বলে মনে হয়েছে, সেখানে বিজিবি ও র্যাবের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া নিয়োগ করা হয়েছে অতিরিক্ত নির্বাহী হাকিমও।
বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্ব পালন শেষে সাজেকের তিনটি কেন্দ্র থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রিসাইডিং অফিসারসহ ঘটনাস্থলেই ছয়জন নিহত হন। হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে নেয়ার পথে পোলিং অফিসার মো. আবু তৈয়বের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত ২৪ জন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ইসি সচিব বলেন, প্রথমে ১২৭ উপজেলায় ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। ৪টি উপজেলায় ভোট পিছিয়েছে। চট্টগ্রামের লোহাগড়া ও কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাচন আদালতের আদেশে স্থগিত করা হয়েছে। আর নরসিংদী সদর ও কক্সবাজার সদরের নির্বাচনের ৩১ মার্চ চতু্র্থ ধাপের ভোট হবে।
অন্যদিকে ৬ উপজেলার সবগুলো পদে প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় আগামীকাল রোববার (২৪মার্চ) ১১৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
হেলালুদ্দীন বলেন, আইন অমান্য করে প্রচারে অংশ না নেয়ার জন্য তিন সংসদ সসদস্যকে সতর্ক করে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারাও আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নির্বাচিত এলাকা ত্যাগ করেছেন। তাই অন্য কোনো অ্যাকশনে আমাদের যেতে হয়নি।
তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৯ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও তিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করেছি। এছাড়াও বেশ কিছু ওসি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ইসি সচিব বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় সকল উপকরণ পৌঁছে গেছে। তৃতীয় ধাপে রংপুর সদর, গোপালগঞ্জ সদর, মানিকগঞ্জ সদর ও মেহেরপুর সদরে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ২৫ জেলার ১১৭ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৪০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৮৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৯৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে ৯ হাজার ২৯৮টি ভোট কেন্দ্রে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি তেমন নেই। বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জন করায় মাঠ পর্যায়ে নেই তেমন কোনো ভোটের উৎসব।
No comments:
Post a Comment